বিএন প্রতিবেদকঃ নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা না পেয়ে এক নিরাপত্তকর্মী মারা যাওয়ার অভিযোগ করেছে নিহতের স্বজনেরা।

নিহত নিরাপত্তাকর্মির নাম সালাউদ্দিন মিরন (৫৫) উপজেলার তমরুদ্দি ইউনিয়নের পূর্ব খিরদিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং উপজেলার স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তাপ্রহরী ছিলেন।

নিহতের ছেলে অভিযোগ করে বলেন, রোববার সকাল পৌনে ছয়টার দিকে তাঁর বাবা দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় সংস্থার লোকজন ও তিনি তাঁর বাবাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। তখন জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক বা অন্য কেউ ছিলেন না। এরপর তিনি বাবাকে জরুরি বিভাগে রেখে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় আন্তবিভাগে যান নার্সদের খোঁজে। সেখানেও কোনো নার্স বা ওয়ার্ডবয়কে পাননি। এভাবে উপর-নিচে দৌড়াদৌড়ি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যান, কিন্তু কোথাও কোনো চিকিৎসক, নার্স কিংবা অন্য কারও দেখা পাননি। এক পর্যায়ে তাঁর বাবা সকাল আটটার দিকে ছটফট করতে করতে বিনা চিকিৎসায় তাঁর কোলেই মারা যান। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

জেলা সিভিল সার্জন মাসুম ইফতেখার জানান, এ ঘটনায় হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. দীপ্ত চন্দ্র কুরী, আফাজিয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) মো. ইখতিয়ার উদ্দিন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশ্রাফ আলীকে তাৎক্ষণিক ভাসানচরে ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে।

পুরো ঘটনা তদন্তে জেলা সিভিল সার্জন অফিস থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মো: সেলিমকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন যাদের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মিলবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: নাজিম উদ্দিন জানান, ঘটনা তদন্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. খাদিজা রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের পৃথক একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।