বিশেষ প্রতিনিধি, বাগেরহাটঃ মোংলায় রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা প্রবাসীর কোটি টাকার নির্মাণাধীন ভবন ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় পুরো শহরজুড়ে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসী মহসীন গাজী (৫০) মোংলা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মোংলা পৌরসভার ফেরিঘাট সংলগ্ন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ (মবক) বরাদ্দকৃত জমিতে ঘর নির্মাণ করছিলেন প্রবাসী বৈদেশিক জাহাজের নাবিক মহসীন গাজী। দীর্ঘদিন বিদেশি জাহাজে সিম্যান হিসেবে কর্মরত থেকে কষ্টার্জিত অর্থে দেশে ফিরে নিজস্ব বরাদ্দকৃত জমিতে ভবন নির্মাণ শুরু করেন।
মহসিন গাজি তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, বুধবার (১ অক্টোবর) রাতের আঁধারে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা তার নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের লিন্টেল, গাঁথুনি ও চারপাশের দেয়াল ভাঙচুর করে। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
মহসীন গাজী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “বিদেশে নদীতে সিম্যানের চাকরি করে প্রবাস জীবন কাটাই। রক্ত-ঘামে উপার্জিত অর্থ দেশে পাঠিয়ে স্বপ্নের ঘর তুলছিলাম। অথচ মোংলার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী গভীর রাতে আমার নির্মাণাধীন ভবন ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।”এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
পৌরসভা বিএনপির নেতা মো. ফারুকুল ইসলাম মানিক বলেন, “আমরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের সৈনিক। কিন্তু কিছু দুর্বৃত্ত সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। এদের কারণে দলের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা চাই।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মোংলার কিছু চিহ্নিত দুর্বৃত্ত দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসীদের সম্পত্তির প্রতি নজর দিয়ে ভয়ভীতি ও দখলবাজি চালিয়ে আসছে। তাদের মতে, বিদেশে কষ্টার্জিত রেমিট্যান্সে দেশে ঘরবাড়ি গড়ে তুললেও প্রবাসীরা নিরাপত্তাহীনতার শিকার হচ্ছেন।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, “অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রবাসীর এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। তারা বলেন, “দেশের অর্থনীতি প্রবাসীদের রেমিট্যান্সে সচল থাকে। অথচ সেই অর্থে গড়ে তোলা ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া মানবিক বিপর্যয়ের শামিল।”
ভুক্তভোগী মহসীন গাজীসহ এলাকাবাসীর একটাই দাবি— “দুর্বৃত্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে এমন শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো প্রবাসীকে একই পরিণতির শিকার হতে না হতে হয়।