বিএন প্রতিবেদকঃ  নোয়াখালীর হাতিয়ায় তমরদ্দি  লঞ্চ ঘাট নিয়ন্ত্রণে নিতে ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি গ্রুপের হামলায়  দলীয় কার্যালয়, বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে । এতে হাসেম সর্দার ও কামরুল ইসলাম সহ অন্তত ১২ জন আহত হওয়ার খোঁজ পাওয়া গেছে এবং লায়লা বেগম নামের এক নারীর অবস্থা সংকটাপন্ন।

আহতদের হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হলেও লায়লা বেগমের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় দায়িত্বরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদরে প্রেরণ করেন। সেখানেও অবস্থার বেগতিক দেখলে সন্ধ্যায় তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান আহত নারীর ভাতিজা নুর ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে তমরোদ্দি লঞ্চঘাটে এ হামলার ঘটনা ঘটলে পুলিশ, নৌবাহিনী ও কোষ্টগার্ড গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার তমরোদ্দি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি তানভীর হায়দার গ্রুপ সকালে ঘাট দখলের জন্য গেলে শ্রমিক ও উপজেলা বিএনপি নেতা আলমগীর হোসেনের সমর্থকদের সাথে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় তানভীর সমর্থকরা বিএনপি অফিস ভাঙচুর করা সহ আজগর হোসেন নামের এক ঘাট শ্রমিকের বসতঘর কুপিয়ে লুটপাট চালায় বলে জানিয়েছেন হাসান কেরানি, রাসেল ও আজগর নামের তিন প্রত্যক্ষদর্শী।

জানা যায়, তমরদ্দি লঞ্চ ঘাটের মূল ইজারাদার ছিলেন গোলাম মাওলা কাজল। গেলবছরের ৫ আগস্ট পরবর্তী ইজারাদার কাজলের অবস্থানচ্যুত হলে তার ভগ্নিপতি মিলাদ মিয়া এর দেখবাল করে। যেখানে উপজেলা প্রশাসন বিএনপি নেতা আলমগীরের সাথে আলাপআলোচনার মাধ্যমে উক্ত ঘাটের কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেয়। বিষয়টি সহজভাবে নেননি তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি তানভীর হায়দার। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঘাটটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে আসছেন। এরই পথ ধরে বৃহস্পতিবার সকালে তানভীরের অনুসারীরা দলবল নিয়ে ঘাটের দখল নিতে গেলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ঘাটের পাশে থাকা শ্রমিকদের পরিবারের নারী পুরুষ সকলে এগিয়ে এলে সংঘর্ষে তারাও আহত হয়। খবর পেয়ে হাতিয়া থানা পুলিশ, নৌবাহিনী ও তমরদ্দি কোস্টগার্ড লঞ্চঘাটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা আলমগীর হোসেন জানান, ঘাটের সাথে আমার কোনো সংযোগ নেই। ৫ আগস্ট পরবর্তী ইজারাদার তার ভগ্নিপতি মিলাদের মাধ্যমে এটি পরিচালনা করেন। ঘাট শ্রমিক এবং শৃঙ্খলা বলবৎ রাখার বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন আমাকে সম্পৃক্ত করতে চাইলে বরং আমি অপারগতা প্রকাশ করি। তিনি জানান, তানভীর ঘাট দখলের জন্য পরিকল্পিত ভাবে আজ নিরীহ শ্রমিকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। গত ১৫ বছর সে সাবেক এমপির সাথে ব্রীকফিল্ড ব্যবসাসহ সকল সুবিধা ভোগ করে আসছে। যার ফলে এ পর্যন্ত তার নামে একটি মামলাও হয়নি বলে জানান আলমগীর হোসেন।

এদিকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি  তানভীর হায়দারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে হাতিয়া থানা তদন্ত ওসি খোরশেদ আলম জানান, তমরদ্দি ঘাট নিয়ে তানভীর ও আলমগীরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে পুলিশ ও নৌবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।