ভাড়াটে সেনা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভাগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোশিন এখন আফ্রিকায় রয়েছেন। প্রিগোশিনের এক সংক্ষিপ্ত ভিডিও বার্তায় এমন ইঙ্গিত মিলেছে। গত জুনের শেষের দিকে রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানচেষ্টার পর এটাই তাঁর প্রথম ভিডিও বার্তা।

সংক্ষিপ্ত ভিডিও বার্তাটি ভাগনারের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করেছেন প্রিগোশিন। এতে সামরিক পোশাক পরিহিত প্রিগোশিনকে রাইফেল হাতে একটি মরুভূমিতে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এটা আফ্রিকার কোনো জায়গা।

ভাগনারপ্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিন ভিডিওতে প্রিগোশিন বলেন, ‘এখানে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির বেশি। তবে সবকিছু আমাদের পছন্দমতো রয়েছে। ভাগনার সব মহাদেশে রাশিয়ার গৌরব বাড়াতে অবদান রেখেছে। এখন আফ্রিকার মানুষকে আরও বেশি মুক্ত ও খুশি করতে এবং তাদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করব। আমরা ইসলামিক স্টেট, আল-কায়েদাসহ সব দস্যুর জীবনকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করব।’

প্রিগোশিন আরও বলেন, ভাগনার গ্রুপ সেনা নিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। সেই সঙ্গে যাঁরা এই সেনা সরবরাহকারী গ্রুপে যুক্ত হতে চান, তাঁদের যোগাযোগ করার জন্য ভিডিওতে একটি টেলিফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে।

ভাগনারপ্রধান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটিতে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করছিল ভাগনার সেনারা। তবে রুশ সামরিক নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ ছিল প্রিগোশিনের।

রাশিয়ায় ভাগনারপ্রধান প্রিগোশিনের গোপন ‘হারেম’ রাষ্ট্রীয় একটি নৈশভোজে ভ্লাদিমির পুতিনের পাশে ইয়েভগেনি প্রিগোশিন (বাঁয়ে)। ২০১১ সালের ১১ নভেম্বর রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর উপকণ্ঠে তোলা এ অসন্তোষের প্রকাশ ঘটে গত ২৩ জুন। বিদ্রোহ করে বসেন প্রিগোশিন। রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের জন্য ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মস্কোর দিকে অভিযান শুরু করেন তিনি। পথে কয়েকটি শহর নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় ভাগনার। ভাগনারের নিয়ন্ত্রণে যায় গুরুত্বপূর্ণ একটি রুশ সেনাঘাঁটি।

প্রিগোশিনের বিদ্রোহের জেরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন। পরবর্তী সময়ে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় অভিযান বন্ধের ঘোষণা দেন প্রিগোশিন। সমঝোতায় বলা হয়, প্রিগোশিনসহ ভাগনার সেনারা রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে চলে যাবেন।